চট্টগ্রামে নগরের গণপরিবহন ব্যবস্থায় নারী যাত্রীদের ভোগান্তিঃ একটি নগর নৃবৈজ্ঞানিক পর্যালোচনা
Abstract
দক্ষিন এশিয়ার অন্যান্য বড় শহরের মতই বাংলাদেশের বন্দর নগরী চট্টগ্রাম শহরেও গণপরিবহন সংকট দেখা যায়। গণপরিবহন সংকটের কারণে নারী পুরুষ নির্বিশেষে নগরীর সকলেই ব্যাপক ভোগান্তির শিকার হন। কিন্তু নারীদের ক্ষেত্রে গণপরিবহনের সংকটের সাথে হয়রানি যুক্ত হয়ে তাদের গণপরিবহন ব্যবহারের ভোগান্তি বৃদ্ধি পায় কয়েকগুণ। অভিযোগ আছে নগরীর বেশিরভাগ নারী গণপরিবহন ব্যবহারের সময় হয়রানীর শিকার হয়েছেন। তা হতে পারে মৌখিক কিংবা শারীরিক। পুরুষ সহযাত্রীদের থেকে শুরু করে বাসের হেল্পার, চালক এমনকি নারী সহযাত্রীদের কাছেও তারা হয়রানীর শিকার হন। নারীরা সামাজিক মর্যাদা ও পারিবারিক সম্মান রক্ষার্থে হয়রানির শিকার হয়েও অধিকাংশ সময় প্রতিবাদ করেন না। প্রতিবাদ করলেও অধিকাংশই মৌখিক প্রতিবাদ করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেন। এছাড়া আইনি সহায়তা গ্রহণ করে থাকেন খুব কম নারীই। গণপরিবহনে নারীর হয়রানি ও ভোগান্তিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে এর সমাধান কল্পে কাজ করা উচিত। এ গবেষণায় চট্টগ্রাম নগরীতে গণপরিবহনে যাতায়াতের সময় নারীদের ভোগান্তি ও হয়রানীর চিত্র নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও নগর নৃবৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে আলোকপাত করার চেষ্টা করা হয়েছে। চট্টগ্রামে যথাযথ পারিবারিক ও সামাজিক শিক্ষার অভাব, নৈতিকতার অবক্ষয়, আইনগত ব্যবস্থা না নেয়ার কারণে গণপরিবহনে নারীদের ভোগান্তির ঘটনা ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলেছে। ভোগান্তির কারণে তাদের জীবনে মানসিক, শারীরিক দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে। এখানে গণপরিবহনে নারীরা যেসকল সুবিধাদি পান তা অতি নগণ্য। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান নারী কর্মী, শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা পরিবহন ব্যবস্থা চালু করলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল। তাই চট্টগ্রাম শহরের স্থানিক জনগোষ্ঠীর সামাজিক-সাংস্কৃতিক দিকসমূহকে গুরুত্ব দিয়ে গণপরিবহন ব্যবস্থা সাজালে এ নগরের সকলেই বিশেষতঃ নারীর হয়রানী এবং ভোগান্তির মাত্রা হ্রাস পাবে বলে আশা করা যায়।